বাক স্বাধীনতা কিংবা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (আইসিটি অ্যাক্ট) করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সোমবার (৬ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘শেপিং অব থার্ড সেক্টর-ল অ্যান্ড পলিসিস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, আমি একটা কথা আগেই বলে রাখি, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট কিন্তু কারও বাক স্বাধীনতা কিংবা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য করা হয় নাই। পেনাল কোডে আমাদের অপরাধগুলো লিপিবদ্ধ করা আছে। চুরি করলে কি শাস্তি হয়, তা সেখানে লেখা আছে। প্রযুক্তির বিস্তার এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এখন চুরি আর ফিজিক্যালি করতে হয় না, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সবোর্চ্চ উদাহরণ।
তিনি বলেন, ডিজিটাইজেশন এবং অ্যাডভান্স কম্পিউটারাইজেশনের ফলে যেসব অপরাধ নতুন মাধ্যম করা যাচ্ছিল সেগুলোকে অপরাধ স্বীকৃতি দিয়ে একটা আইনের প্রয়োজন ছিল। আমার সঙ্গে সারা বিশ্বে নানা অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে যত আলাপ-আলোচনা হয়েছে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের প্রয়োজনীয়তা নাই, এই কথা কিন্তু কেউ বলে নাই।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য, এই আইনটা করার পরে অনেক মিস ইউজ এবং অ্যাবিউজ দেখেছি। সত্যকে অস্বীকার করবো না এবং সত্যকে স্বীকার করতেও আমার দ্বিধা নেই। যখন আমি দেখলাম এই আইনটা অপব্যবহার হওয়ার যথেষ্ট প্রবণতা দেখা দিয়েছে, তখন ইমিডিয়েটলি এটা নিয়ে কি করা যায়, তা নিয়ে নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে বসেছিলাম।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে হিউম্যান রাইটস হাই কমিশনের অফিস থেকে আমরা একটা সাজেশন পেয়েছি এবং এই সাজেশনটা আমরা দেখছি। আরেকটি প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ) মামলাটা অনেকেই করেন। যাকে আসামি করা হয় তাকে কিছুদিনের জন্য যেন জেল খাটানো যায়। এইরকম একটা প্রবণতার কারণেই মামলা করা হয় এবং মামলাটা গ্রহণও করা হয়। তখন আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে, প্রথমেই যেটা করলাম- সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যদি ডিএসএ আইনে মামলা করা হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে মামলাটা যেন গ্রহণ করা না হয়। যাচাই-বাছাইয়ের জন্য যেন অন্য সেলে পাঠানো হয়। অনেকেই হয়তো প্রশ্ন করবেন সাংবাদিক কেন সবাইকে না কেন? সাংবাদিক প্রথমে ছিল এই কারণে যে, এই আইনের উদ্দেশ্য যে বাক স্বাধীনতা হরণ করার জন্য নয়, সেটাকে এস্টাবলিস্ট করা। সেই মেসেজটা পুলিশের কাছে পৌঁছে দেওয়া। সেটা আমি মনে করি সাকসেসফুল হয়েছে।